ওমরাহ গাইডলাইন - ওমরাহ পালনে করণীয় ও বর্জনীয়
ওমরাহ একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা। এটি এমন একটি সুযোগ যা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একত্রিত করে একটি সুমহান ঐতিহ্য উদযাপনের উপলক্ষ তৈরি করে দেয়। ওমরাহ আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে আত্নশুদ্ধির সুযোগ তৈরি করে। এটি শুধু একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা নয়, বরং জীবনের প্রতিটি দিককে শুদ্ধ করার একটি সুযোগ। ওমরাহ পালনে আগ্রহীদের জন্য স্টেপ বাই স্টেপ ওমরাহ গাইডলাইন এবং করণীয় ও বর্জনীয়গুলো এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
কক্সবাজার হজ্জ কাফেলা (হজ্জ ও ওমরাহ্ লাইসেন্স নং-৭২৩) বাংলাদেশের সেরা ওমরাহ ও হজ্জ এজেন্সি। আমরা ভিসা প্রসেসিং, বিমান টিকিট এবং ওমরাহ প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের পরিষেবা প্রদান করি। আপনার ওমরাহ যাত্রা সহজ এবং সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে এখনই আমাদেরকে কল করুন 01898-822328।
আমরা আপনাকে সেরা পরিষেবার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।

স্টেপ বাই স্টেপ ওমরাহ গাইডলাইন
ওমরাহ পালনের মাধ্যমে মুমিনরা তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় সম্পন্ন করেন। ওমরাহ পালন করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া আছে। এখানে ধারাবাহিকভাবে সে প্রক্রিয়াগুলো উল্লেখ করা হল:
০১. ইহরাম (ফরজ)
ওমরাহ পালন করার জন্য ইহরাম অপরিহার্য। ইহরামের পোশাক পরার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়:
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল বা অজু করা
- মিকাতের আগে বা মিকাতে ইহরামের কাপড় পরে নেওয়া
- ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা
- ওমরাহর নিয়ত করার পর এক বা তিনবার নিন্মোক্ত তালবিয়া পড়া
লাব্বাইকা আলাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা।
অর্থ: আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, তোমার কোন অংশীদার নেই, আমি হাজির, নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা এবং নেয়ামত তোমার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য তোমার, তোমার কোন অংশীদার নেই।
০২. তাওয়াফ (ফরজ)
ওমরাহ পালনের জন্য তাওয়াফ করা আবশ্যক। তাওয়াফ করার প্রস্তুতি হিসেবে যে কাজগুলো করতে হয়:
- তাওয়াফের নিয়ত করা
- অজু করা
- ইহরামের চাদর সঠিকভাবে ডান কাঁধে পেঁচিয়ে নিয়ে বাম কাঁধের ওপর রাখা
- হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার ডান পাশ বরাবর দাঁড়ানো
ভিড় না থাকলে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করা। আলতোভাবে উভয় হাত পাথরের উপর রেখে, “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলা এবং চুম্বন করা। ডান হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করে সরাসরি চুম্বন করা কঠিন হলে হাতের স্পর্শ করা অংশে চুম্বন করা। হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা বা চুম্বন করা সম্ভব না হলে দূরত্বে দাঁড়িয়ে ডান হাত তুলে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা এবং এক হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদের দিকে ইশারা করা। এই ক্ষেত্রে চুম্বন বা হাত স্পর্শ করা আবশ্যক নয়। এভাবে সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করা।
০৩. সায়ি (ওয়াজিব)
সায়ি করার পদ্ধতি হল:
- সাফা পাহাড়ের কাছে গিয়ে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দাঁড়ানো
- দোয়ার মতো হাত তুলে তিনবার তাকবির বলা
- মারওয়া পাহাড়ের কাছে পৌঁছালে, সাফা পাহাড়ের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো হাত তুলে তাকবির বলা
- মারওয়া পাহাড়ের উপরে উঠা
- উভয় পাহাড়ের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো হাত তুলে তাকবির বলা
- এইভাবে দুই পাহাড়ের মাঝে সাতবার দৌঁড়ানো
- সায়ি শেষে দোয়া করা
সায়ি করার সময় আপনি দৌঁড়াতে পারেন, বা হেঁটে যেতে পারেন।
০৪. চুল মুন্ডন করা (ওয়াজিব)
চুল মুন্ডন করা (ওয়াজিব)। ওমরাহ পালনে এটি অবশ্যই করণীয়। পুরুষের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আদর্শ অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডন করা। তবে কেউ চাইলে মাথার চুল ছাঁটতেও পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে চুল এক ইঞ্চি পরিমাণ কেটে ফেলা।
ওমরাহ পালনে করণীয় ও বর্জনীয়
ওমরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি পালনের সময় কিছু কাজকে গুরুত্ব দিতে হয় এবং কিছু কাজ বর্জন করতে হয়। এখানে ওমরাহ পালনের করণীয় ও বর্জনীয়গুলো তুলে ধরা হল:
ওমরাহ পালনে করণীয়:
- নফল তাওয়াফ বেশি করা
- অধিক পরিমাণ জমজমের পানি পান করা
- হাতিমে সালাত আদায় করা
- মাকামে ইবরাহিমে সালাত আদায় করা
- হাজরে আসওয়াদ চুমু খাওয়া
- কাবা ঘর ধরে দোয়া করা
- মুলতাযাম ধরে দোয়া করা
ওমরাহ পালনে বর্জনীয়:
- সহবাস করা
- দাঁড়ি বা গোফ কাটা ও মুন্ডন করা
- চুল বা নখ কাটা
- লোম তোলা
- সুগন্ধি বা পারফিউম ব্যবহার করা
- ঝগড়া করা
- গালাগালি করা
- পশু শিকার করা
- গাছের পাতা ছেঁড়া
- খারাপ কথা বলা
নোট: ইহরাম অবস্থায় এ কাজগুলো করা যাবে না। ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়ার পর ঝগড়া, গালাগালি ও খারাপ কথা বলা ছাড়া উপরের সব কাজ করা যাবে।